পা ফোলা কমানোর ব্যায়াম, বিষয়ে আজ আমি আপনাদেরকে জানাবো।পা ফোলা সমস্যাটা সাধারণত সবারই কমবেশি দেখা দেয়। কারো দুই পা ফুলতে পারে আবার কারো এক পাও ফুলে থাকে। কারণ সবসময়ই পা ফুলে থাকে কারো আবার সাময়িক সময়ের জন্য পা ফুলে থাকে, অনেকের আবার কিছুক্ষণ বসে থাকলেও পা ফুলে থাকে।
যাদের উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন খুব অনেক বেশি তাদের পা একটু বেশি ফোলা থাকতে পারে আবার দেখা যায় যারা একভাবে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করে তাদের ক্ষেত্রেও এই পা ফোলা সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। আবার পা ঝুলিয়ে বসে থাকলেও পা ফোলা দেখা দিতে পারে, অনেকের গর্ব অবস্থায় পা ফোলা দেখা দেয় ও পা ফুলে যায়।
তাই আজকে পা ফোলা কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কিত যেসব সমস্যা আমাদের মাঝে আছে এই সমস্ত বিষয়ে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আমাদের এই বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে পা ফোলা কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারবে।
পা ফোলা কমানোর ব্যায়াম।
পা ফোলা বিষয়টা অনেকেই প্রথম দিক দিয়ে খেয়াল করে না আবার অনেকে পা ফোলা বিষয়টা সেরকম একটা গুরুত্ব দেয় না। তবে পা ফোলাটাকে অবশ্যই আমাদের গুরুত্ব দেয়া উচিত। যদি দেখেন আপনার পা প্রায়ই ফুলে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ পা ফোলা বিষয়টি অনেক রোগের উপসর্গের লক্ষণ বললেই চলে।
প্রায় একজন ব্যক্তির বিভিন্ন সমস্যার কারণেই পা ফুলে যেতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যে ভ্রমণের জন্য বেশিক্ষণ হাঁটাচলা করলে অনেকের পা ফুলে যায়, পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে পা ফুলে যায়, অনেকে বাসে দীর্ঘ সময় বসে থাকা বসে থাকলে পা ফুলে যায়, অনেকে কিডনির সমস্যা দেখা দিলেও পা ফুলে যায়, গর্ভবতী মায়ের ও পা ফুলে যায়।
তাই এইসব পা ফোলা বিষয়গুলোকে অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ অনেক মারাত্মক রোগ আছে যেসব রোগের উপসর্গ হলো এই পা ফোলা। অনেকের কিডনির সমস্যা দেখা দিলে পা ফুলে যায় প্রসাবে ইনফেকশন খুব বেশি বেড়ে গেলে পা ফুলে যায় এরকম আরো মারাত্মক রোগের উপসর্গর লক্ষণ হচ্ছে পা ফোলা।
তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। ওষুধ খাবেন আর নিয়ম-কানুন মেনে চলবেন। আর এই পা ফোলার কমানোর কিছু ঘরোয়া ব্যায়াম আছে যেগুলো নিম্নে সুন্দরভাবে উল্লেখ করা হলো।
পা ফোলা কমানোর ব্যায়াম হল-
- ঘুমানোর সময় পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে ঘুমাবেন। এরকম কিছু দিন পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে ঘুমালে দেখবেন যে আপনার পা ফোলা অনেকটাই কমে গেছে।
- যাদের পায়ের ফোলা সমস্যা আছে , তারা সকালে উঠে বিছানায় বসে হাত দিয়ে দুই পা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্যায়াম করবেন।
- সকালে উঠে নিয়মিত হাঁটবেন ও বসে থাকা অবস্থায় তার গোড়া ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নাড়াবে।
- যারা যারা অফিসে বসে কাজ করেন তাদের দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয় , তখন একটু সময় বের করে কাজের ফাঁকে ফাঁকে হাটা দিবেন। কারণ দীর্ঘ সময় বসে থাকলে শরীরের ও পায়ের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় যে কারণে পা ফোলা সমস্যা দেখা দেয়। আর আপনি যদি এক ভাবে বসে না থেকে পা নাড়াচাড়া করেন, বা উঠে একটু হাঁটাচলা করেন তাহলে আপনার ব্লাড সার্কুলেশন ভালো থাকে। আর পা ফলা কমে যায়।
- মাঝে মাঝে আসন দিয়ে অর্থাৎ এক পায়ের উপরে আরেক পা উঠিয়ে কমর মেরুদন্ড টানটান করে পাঁচ মিনিটের মত বসে থাকলেও পা ফোলা কমে যায়।
পা পোলার কারণ ও প্রতিকার।
পা ফোলার কারণে ও প্রতিকার বিষয়ে আমাদের সবার জানা উচিত। কারণ পা ফোলা প্রতিকার করা একান্তই উচিত কারণ পা ফোলার কারণে আপনার শরীরে অনেক সমস্যাই হতে পারে। তাই আমরা পা ফোলার কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে জেনে নিব।
পা ফোলার কারণ-
কিডনি রোগ: কিডনি মানুষের শরীরের রক্ত পরিশোধন করে থাকে। মানুষের শরীরে থেকে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বের করে দেয়। মানুষের দেহে পানির ভারসাম্য রক্ষা করার কাজ হল কিডনির।যখন এমন ফিল্টারিংএর কাজ ঠিকমতো করতে পারেনা, তখন অতিরিক্ত পানি জমে পা ফুলে যায়।তাই যদি পা ফোলা কারো দেখা দেয় অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
হৃদরোগ: হৃদযন্ত্র আমাদের থাকা পুরো শরীরের রক্ত সঞ্চালন করে। হৃদযন্ত্রের সাহায্যে রক্ত সঞ্চালন হয়ে থাকে। যখন হৃদযন্ত্রের রক্ত সঞ্চালন করার ক্ষমতা কমে যায় তখন তাকে হার্ড ফেলিউর বলা হয়ে থাকে। এই হার্ট ফেলি ওর সমস্যার কারণে এক পর্যায়ে ফুসফুসে পানি জমে। আর ফুসফুসে পানি জমলে সেটা তো পরীক্ষা ছাড়া বাহির থেকে দেখা সম্ভব না। যখন ফুসফুসে পানি জমে তখন পা ফুলে যায়। তাই পা ফোলা বিষয়টিকে অবশ্যই গুরুত্ব দিবেন।
হরমোনের সমস্যা: মানুষের শরীরে যখন থাইরয়েড দেখা দেয়, আর থাইরয়েডের কারণে হরমোনের মাত্রা কমে যায়। যখন হরমোনের মাত্রা কমে যায় তখন পায়ে পানি জমে ও পা ফুলে যায়।
গর্ভকালীন পা ফোলা: অনেক গর্ভবতী মায়ের এই গর্ভকালীন পা ফুলে যায়। কারণ ওই গর্ভকালীন অবস্থায় মায়ের হরমোনালি কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে শরীরে পানি জমে ও অনেক সময় পাও ফুলে যায়। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের যদি পা খোলা টা যদি খুবই অস্বাভাবিকভাবে দেখেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
পা ফোলার প্রতিকার-
- পা ফোলে গেলে ঘুমানোর সময় পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে ঘুমাবেন তাহলে আপনার খুবই শীঘ্রই পায়েল খোলা কমে যাবে।
- পা ফোলা দেখলে ভাত ও যেসব খাবারে ফ্যাট বেশি এসব খাবার এড়িয়ে চলবেন দেখবেন আপনার পা খোলা কমে যাবে।
- পা ফোলা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে নিয়মিত ওষুধ খাবেন।
- পা ফুলে গেলে লবনও খনিজাতীয় খাবার কম খাবেন।
- পা ফুলে গেলে নিয়মিত পায়ের ব্যায়াম করবেন।
- পা ফোলা রোগী বেশিক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসে থাকবেন না আর বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না।
পা ফোলা রোগের চিকিৎসা।
পা পোলা রোগের চিকিৎসা বিষয়ে সবারই কমবেশি জানা উচিত তাই আমি সুন্দরভাবে নিম্নে উল্লেখ করলাম পা ফোলা রোগের চিকিৎসা বিষয়-
পা ফোলার যে চিকিৎসা রয়েছে সেটা সব রোগীর জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ আমাদের অনেকের সাধারণ কারণেও পা ফোলা থাকে। যেমন বেশি হাঁটাচলা করলে জার্নি করলে , গর্ব অবস্থায় ডেলিভারির আগ মুহূর্তে এই সব ছোটখাটো বিষয় আমাদের অনেকেরই পা ফোলা থাকে তবে সেটা সেরকম চিন্তার বিষয় নয়। তারপরও চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই সবথেকে শ্রেয়।
তবে কিডনি, ফুসফুসে পানি, রক্ত সঞ্চালন কমে যাওয়া এইসব গুরুতর রোগের কারণে যাদের পাপ হলে তাদের চিকিৎসা বিষয়ে বলছি।
আধুনিক চিকিৎসায় সিরাতে লাইনের মাধ্যমে বা ডিভিডি আক্রান্ত শিরার মধ্যে ক্যাথেটার ঢুকিয়ে তার মাধ্যমে এমন কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হয়ে থাকে যার মাধ্যমে জমাট রক্তকে তরলাইত করা হয়।
অনেক সময় আবার জমাট বাধা রক্তকে যন্ত্রের মাধ্যমে করে বাইরে বের করে নিয়ে আসা হয়ে থাকে ডিভিটি শুরু হওয়ার সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহের মধ্যে ভেতরে এসব চিকিৎসা শুরু করার সুযোগ থাকে। এসব চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা। তবে এই চিকিৎসা এখনো বাংলাদেশে জনক প্রিয় এখনো হয়ে ওঠেনি।
আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পা ফোলা কমানোর ব্যায়াম সহ আরো বিভিন্ন পা ফোলা বিষয় জানতে পেরেছেন। আমি হয়তো আপনাদের পা ফোলা কমানোর ব্যায়াম পা ফোলার কারণ ও প্রতিকার এই সমস্ত বিষয় বিস্তারিত জানাতে পেরেছি। ধন্যবাদ-
0 Comments